নবম পদার্থ বিজ্ঞান || কাজ ক্ষমতা ও শক্তি || জাকির রুবেল।
কাজ, ক্ষমতা ও শক্তি
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন-১. কাজ কাকে বলে?
উত্তরঃ কোনো বস্তুর উপর বল প্রয়োগের ফলে যদি বস্তুটির সরণ হয় তাহলে, প্রযুক্ত বল এবং বলের দিকে বস্তুর অতিক্রান্ত দূরত্বের গুণফলকে কাজ বলে।
প্রশ্ন-২. এক জুল কাকে বলে?
উত্তরঃ কোনো বস্তুর উপর এক নিউটন বল প্রয়োগের ফলে যদি বস্তুটির বলের দিকে এক মিটার সরণ হয় তবে সম্পন্ন কাজের পরিমাণকে এক জুল বলে।
প্রশ্ন-৩. বিভব শক্তি কাকে বলে?
উত্তরঃ স্বাভাবিক অবস্থা পরিবর্তন করে কোনো বস্তুকে অন্য কোনো অবস্থায় আনলে বস্তু কাজ করার যে সামর্থ্য অর্জন করে তাকে বিভব শক্তি বলে।
প্রশ্ন-৪. নিউক্লিয় ফিশন কী?
উত্তরঃ যে নিউক্লীয় বিক্রিয়ায় প্রাপ্ত শক্তিকে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহার করা হয় সেই বিক্রিয়াকে বলা হয় নিউক্লিয় ফিশন।
প্রশ্ন-৫. শক্তির সংরক্ষণশীলতা নীতিটি লিখ।
উত্তরঃ শক্তির সৃষ্টি বা বিনাশ নেই, শক্তি কেবল একরূপ থেকে অপর এক বা একাধিক রূপে পরিবর্তিত হতে পারে। মহাবিশ্বের মোট শক্তির পরিমাণ নির্দিষ্ট ও অপরিবর্তনীয়।
প্রশ্ন-৬. এক ওয়াট কাকে বলে?
উত্তরঃ এক সেকেন্ডে এক জুল কাজ করা বা শক্তি রূপান্তরের হারকে এক ওয়াট বলে।
প্রশ্ন-৭. কর্মদক্ষতা কাকে বলে?
উত্তরঃ লভ্য কার্যকর ক্ষমতা ও মোট প্রদত্ত ক্ষমতার অনুপাতকে কর্মদক্ষতা বলে।
প্রশ্ন-৮. বলের দ্বারা কাজ কাকে বলে?
উত্তরঃ বল প্রয়োগের ফলে বস্তু যদি বলের দিকে সরে যায় তাহলে সেই কাজকে বলের দ্বারা কাজ বলে।
প্রশ্ন-৯. বলের বিরুদ্ধে কাজ বলতে কী বোঝায়?
উত্তরঃ যদি বল প্রয়োগের ফলে বস্তু বলের বিপরীত দিকে সরে যায় তাহলে সেই কাজকে বলের বিরুদ্ধে কাজ বলে।
প্রশ্ন-১০. গতিশক্তি কাকে বলে?
উত্তরঃ কোনো গতিশীল বস্তু তার গতির জন্য কাজ করার যে সামর্থ্য লাভ করে তাকে গতিশক্তি বলে।
প্রশ্ন-১১. যান্ত্রিক শক্তি কাকে বলে?
উত্তরঃ কোনো বস্তুর অবস্থান বা গতির কারণে তার মধ্যে যে শক্তি নিহিত থাকে তাকে যান্ত্রিক শক্তি বলে।
প্রশ্ন-১২. বিভব শক্তি বলতে কী বোঝায়? ব্যাখ্যা করো।
উত্তরঃ স্বাভাবিক অবস্থান থেকে পরিবর্তন করে কোনো বস্তুকে অন্য অবস্থানে বা স্বাভাবিক অবস্থা পরিবর্তন করে অন্য কোনো অবস্থায় আনলে বস্তু কাজ করার যে সামর্থ্য অর্জন করে তাকে বিভব শক্তি বলে। বিভব শক্তিকে Ep, দ্বারা প্রকাশ করা হয়। কোনো বস্তুর মধ্যে সঞ্চিত বিভব শক্তি অভিকর্ষজ ত্বরণ (g) এবং ভূমি হতে বস্তুর উচ্চতা h এর উপর নির্ভর করে। পৃথিবী পৃষ্ঠ থেকে m ভরের কোনো বস্তু h উচ্চতায় অবস্থান করলে উক্ত বস্তুর মধ্যে সঞ্চিত বিভবশক্তি, Ep = mgh।
প্রশ্ন-১৩. বিভব শক্তি কিসের উপর নির্ভরশীল? ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ বস্তুকে যখন উপরে তোলা হয় তখন ঐ বস্তু কিছু বিভব শক্তি লাভ করে। m ভরের কোনো বস্তুকে ভূপৃষ্ঠ থেকে h উচ্চতায় উঠাতে কৃত কাজই হচ্ছে বস্তুতে সঞ্চিত বিভব শক্তির পরিমাণ। আর এ ক্ষেত্রে কৃতকাজ হচ্ছে বস্তুর উপর প্রযুক্ত অভিকর্ষ বল তথা বস্তুর ওজন এবং উচ্চতার গুণফলের সমান।
বিভবশক্তি = বস্তুর ওজন x উচ্চতা = বস্তুর ভর x অভিকর্ষজ তরণ x উচ্চতা।
বিভব শক্তি ভূপৃষ্ঠ থেকে বস্তুর উচ্চতার উপর নির্ভর করে। উচ্চতা যত বেশি হবে, বিভব শক্তিও তত বেশি হবে। বিভব শক্তি বস্তুর ভরের উপরেও নির্ভর করে। ভর যত বেশি হবে বিভব শক্তিও তত বেশি হবে।
প্রশ্ন-১৪. একটি ইঞ্জিনের কর্মদক্ষতা 70% বলতে কী বুঝ?
উত্তরঃ কোনো ইঞ্জিনের কর্মদক্ষতা বলতে বুঝায়, যন্ত্রের যে পরিমাণ শক্তি প্রদান করা হয় তার কত অংশ কার্যকর শক্তি হিসেবে পাওয়া যায় তার। এটি সাধারণ শতকরা হিসাবে প্রকাশ করা হয়।
একটি ইঞ্জিনে কর্মদক্ষতা 70% বলতে বোঝায়, ইঞ্জিনটিতে 100J শক্তি সরবরাহ করলে আমরা তা থেকে 70J শক্তি পাই। বাকী 30J শক্তি অপচয় হয়।
প্রশ্ন-১৫. কোনো বস্তুর গতিশক্তি 500J বলতে কী বুঝ?
উত্তরঃ কোনো বস্তুর গতিশক্তি 500J বলতে যা বুঝায় তা নিম্নরূপ
বস্তুটি একটি নির্দিষ্ট বেগে থাকলে গতির জন্য 500J কাজ করতে পারবে।
বস্তুটিকে বাইরে থেকে বল প্রয়োগ করে থামাতে হলে থেমে যাওয়ার পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত বস্তুটি ঐ বলের বিরুদ্ধে 500J পরিমাণ কাজ করতে পারে।
প্রশ্ন-১৬. বল প্রয়োগ করা সত্ত্বেও কাজ শূন্য হতে পারে ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ আমরা জানি, কাজ = বল X বলের দিকে সরণের উপাংশ। সুতরাং বল প্রয়োগ করা সত্ত্বেও যদি সরণ না ঘটে, বা ঘটলেও বলের দিকে সরণের উপাংশ শূন্য হয়, তাহলে কৃতকাজ শূন্য হবে। যেমন- এক ব্যক্তি সারাদিন ধরে ঠেলা সত্ত্বেও কোনো ভারী বস্তুকে সরাতে সক্ষম না হলে কোনো কাজ করেছে বলে ধরা হবে না।
প্রশ্ন-১৭. গতিশক্তি কখনও ঋণাত্মক হতে পারে না—ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ ভর m ও বেগ v হলে গতিশক্তি Ek =1/2 mv2
এ সমীকরণে ভর m সর্বদা ধনাত্মক এবং বেগ v ধনাত্মক বা ঋণাত্মক যাই হোক না কেন বেগের বর্গ অবশ্যই ধনাত্মক হবে। ফলে গতিশক্তি কখনোই ঋণাত্মক হতে পারবে না।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন